চট্টগ্রাম-কলকাতা বিমানভাড়া বেড়েছে তিন গুণ | কালের কণ্ঠ – kalerkantho

কলকাতা নিউজ

চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা বিমানে যেতে এখন আপনার খরচ পড়বে ২১ হাজার টাকা। আসা-যাওয়া নয়, শুধু যেতেই আপনার এই ভাড়া গুনতে হবে। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও বিষয়টি সত্য। কলকাতা আসা-যাওয়া মিলিয়ে আপনার গুনতে হবে ৪০ হাজার টাকার বেশি।

বিজ্ঞাপন

স্বাভাবিক সময়ে অর্থাৎ করোনা মহামারির আগে আপনি ১৩ হাজার টাকায় কলকাতা আসা-যাওয়া করতে পারতেন। এখন সেটি নতুন এক রেকর্ড ছুঁয়েছে। আর বিদেশি বিমান সংস্থা হওয়ায় পুরো টাকাটাই বিদেশে চলে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম-কলকাতা রুটে এখন শুধু ‘স্পাইস জেট’ যাত্রী পরিবহন করছে; ফলে একচেটিয়া ব্যবসা করছে ভারতের বেসরকারি সেই বিমান সংস্থা। করোনার সময়ে দুই দেশের মধ্যে ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি থাকলেও রহস্যজনক কারণে তারা ফ্লাইট চালাচ্ছে না। ফলে একটি বিমান সংস্থার একক নির্ভরশীলতার কারণে যাত্রীদের বিশেষ করে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী ও স্বজনদের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে গালফ ট্রাভেলসের মালিক এবং চট্টগ্রাম হজ এজেনসিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘একটি বিমান সংস্থা চট্টগ্রামে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ থাকায় ভাড়া তিন গুণ বেশি নিচ্ছে। কলকাতা যাচ্ছে মূলত চিকিৎসার রোগীরা; ফলে রোগী ও তাদের স্বজনদের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। এয়ার বাবলের আওতায় অনুমতি থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ বিমান কেন চলছে না সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। ’

জানা গেছে, ‘স্পাইস জেট’ চট্টগ্রাম-কলকাতায় সপ্তাহে চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। মাত্র ৭৮ আসনের বিমান দিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে এই বাজেট এয়ারলাইনস। পর্যটক ভিসা না থাকায় কেবল মেডিক্যাল ভিসায় যাত্রীরা সেখানে যাচ্ছে।

স্পাইস জেটের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, ২২ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কলকাতা রুটে তাদের কোনো সিট খালি নেই; সব টিকিট বিক্রি শেষ। আর ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম-কলকাতার একমুখী ভাড়া প্রায় ২০ হাজার টাকা। এই ভাড়ার মধ্যে খাবার এবং লাগেজ পরিবহন সুবিধা নেই। লাগেজ নিতে হলে বিমানভাড়া আরো অন্তত তিন হাজার টাকা বেশি যোগ করতে হবে। ফিরতি পথে ১৫ এপ্রিলের ভাড়া গুনতে হবে সাড়ে ১৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা গিয়ে চট্টগ্রাম ফিরে আসতে আপনাকে ৪০ হাজার টাকা গুনতে হবে।

বাংলাদেশে স্পাইস জেট পরিচালনা করছে স্কাইজেট এভিয়েশন। জানতে চাইলে স্পাইস জেট চট্টগ্রামের প্রধান আসিফ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মূলত চাহিদা-সরবরাহে ভারসাম্য না থাকায় এমনটা হচ্ছে। পরিস্থিতি উত্তরণে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি বড় ফ্লাইট চালু করতে। আর বাংলাদেশ-ভারত ‘এয়ার বাবল’ উঠে গেলে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়বে; প্রতিযোগিতা বাড়বে; ভাড়াও কমে যাবে। ’

প্রতিযোগিতা না থাকায় বিমানভাড়া তিন গুণ বেশি আদায় করা হচ্ছে। এর প্রমাণ স্পাইস জেট ঢাকা-কলকাতা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা। ২৩ মার্চ ঢাকা-কলকাতা ভাড়া ২০ হাজার টাকা। আর কলকাতা-চট্টগ্রাম ভাড়া সাত হাজার টাকা। ফলে ঢাকা থেকে যাত্রীরা ২৭ হাজার টাকায় আসা-যাওয়া করতে পারছে। অথচ একই সময়ে চট্টগ্রাম থেকে আসা-যাওয়া করতে ৪০ হাজার টাকার বেশি লাগছে। মূলত চট্টগ্রামে একক ফ্লাইট থাকায় এখানে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

Source: https://www.kalerkantho.com/print-edition/profit-loss/2022/03/13/1128480