মরগান-ঝড় ও কামিন্সের তোপে আশায় কলকাতা – Bangla Tribune

কলকাতা নিউজ

চতুর্থ ও পঞ্চম বল থেকে দুটি সিঙ্গেল হতো, নিলেন না ইয়ন মরগান। চার-ছক্কা ছাড়া খুচরো রান নিয়ে লাভ কী? ইনিংসের শেষ বলটিকে বোলার কার্তিক ত্যাগীর মাথার ওপর দিয়ে উড়িয়ে মাঠের বাইরে ফেললেন। ছয়! কলকাতা নাইট রাইডার্সের রান হলো ১৯১। শিশিরের কারণে পরে বোলিং করাটা কঠিন, সেটি বিবেচনায় নিলেও এটা বড় স্কোর।

অধিনায়ক মরগানের মতোই কলকাতার বোলাররাও দুর্ধর্ষ । নেতৃত্বে সাড়ে ১৫ কোটি রুপির অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স। ৩৪ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, তিনটিই পাওয়ার প্লের মধ্যে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ পারফরম্যান্স। সঙ্গে স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী এবং আর দুই পেসার শিভম মাভি ও কমলেশ নগরকোটি মিলে রাজস্থান রয়্যালসকে ১৩১ রানেই থামিয়ে দিয়েছেন, শেষ রাজস্থানের আইপিএল স্বপ্ন। ৬০ রানের বিশাল জয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে প্লে-অফের স্বপ্ন দেখছে কলকাতা। সোমবার রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর-দিল্লি ক্যাপিটালস দ্বৈরথে কোনও দল ২০ রানের বেশি ব্যবধানে হারলেই তাদের কলকাতা চলে যাবে প্লে-অফে। এই সমীকরণ যদি নাও মেলে শীর্ষে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ানস সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে পরের দিন হারিয়ে দিলেই হাসবে কলকাতা।

দুবাই স্টেডিয়ামে রবিবার রাতের ম্যাচটি কলকাতার জন্য শুধু জেতার চ্যালেঞ্জই ছিল না, ছিল বড় ব্যবধানে জিতে বাজে নেট রান রেটকে ভদ্রস্থ করার চ্যালেঞ্জও। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামতে হওয়ায় চ্যালেঞ্জটা বেড়ে যায় আরও। ম্যাচের তৃতীয় বলেই কলকাতার ওপেনার নীতিশ রানাকে তুলে নেন জফরা আর্চার। দ্বিতীয় উইকেটে শুভমান গিল ও রাহুল ত্রিপাঠি ৭২ রানের জুটি গড়েন। রানার পর আরও দুটি শূন্য উপহার দিয়ে যান সুনীল নারাইন ও দিনেশ কার্তিক। তারপর দায়িত্ব হাতে (আসলে ব্যাটে) তুলে নেন মরগান। আন্দ্রে রাসেল ও প্যাট কামিন্সের সমর্থনে দলকে নিয়ে যান ১৯১ রানে। ৩৫ বলে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৬৮ করে অপরাজিত মরগান। ত্যাগীর বলে ক্যাচ হওয়ার আগে এক চার ও ৩ ছক্কায় ১১ বলে ২৫ করেন হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় তিন ম্যাচ পরে ফেরা রাসেল। মরগান-রাসেল ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৪৫ রান আসে ৩ ওভারে। ত্যাগীর বলেই ক্যাচ হয়ে ফেরার আগে ১১ বলে ১৫ রান করেন কামিন্স। সপ্তম উইকেট ৩.৫ ওভারে ৪০ রান যোগ হয় ৪০ রান।

জয়ের জন্য মরিয়া রাজস্থান রান তাড়ায় প্রথম পাঁচটি বল থেকেই তুলে ফেলেছিল ১৯ রান। ষষ্ঠ বলে রবিন উথাপ্পা ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ হওয়ার পর থেকেই তাদের পতন শুরু। নিজের দ্বিতীয় ওভার আর ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম ও ষষ্ঠ বলে কামিন্স ফেরান বেন স্টোকস ও  অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে। স্টোকস  কার্তিকের গ্লাভসে অসাধারণ এক ক্যাচ, স্মিথ প্লেড অন। তিন ওভার শেষেই রাজস্থান ৩ উইকেটে পরিণত হয় ৩২ রানে। পাঁচ ওভার শেষে ৩৭/৫। পেসার শিভম মাভির শিকার সঞ্জু স্যামসন, রিয়ান পরাগ চতুর্থ শিকার কামিন্সের। এখান থেকে জিততে হলে রাজস্থানকে অলৌকিক ব্যাটিং করতে হতো। জস বাটলার (২২ বলে ৩৫ রান) এসে হাঁকাতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু বরুণ চক্রবর্তীর লেগস্পিনে ক্যাচ তুলে ফিরে যান। ব্যাঙ্গালোর কখন থামবে, তখন এটাই ছিল দেখার বিষয়। রাহুল তেয়াতিয়ার একটু প্রতিরোধে ব্যাঙ্গালোর থামে ৯ উইকেটে ১৩১ রানে।

৬০ রানের বিশাল জয়ে নিজেদের পক্ষে যতটা করার ছিল করেছে কলকাতা। এখন ক্রিকেট-দেবতা তাদের ভাগ্যে কী লিখেছে সেটাই দেখার। আগামীকাল নিয়তি নির্ধারিত না হলে ৩ নভেম্বর  মুম্বাই-হায়দরাবাদ ম্যাচে হবেই। ওটাই যে উত্তেজনা ও রোমাঞ্চে টগবগ করে ফুটতে থাকা এবারের আইপিএলের লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কলকাতা: ২০ ওভারে ১৯১/৭(মরগান ৬৮*, ত্রিপাঠি ৩৯, গিল ৩৬, রাসেল ২৫, তেওয়াতিয়া ৩/২৫, ত্যাগী ২/৩৬) ও রাজস্থান: ২০ ওভারে ১৩১/৯ (বাটলার ৩৫, তেওয়াতিয়া ৩১, গোপাল ২৩, স্টোকস ১৮, কামিন্স ৪/৩৪, মাভি ২/১৫, বরুণ ২/২০)।

পয়েন্ট তালিকা (শীর্ষ পাঁচ):

                 ম্যাচ     জয়     হার   পয়েন্ট   নেট রান রেট

মুম্বাই          ১৩         ৯        ৪      ১৮       ১.২৯৬

ব্যাঙ্গালোর  ১৩         ৭        ৬      ১৪      -০.১৪৫

দিল্লি           ১৩         ৭        ৬      ১৪      -০.১৫৯

কলকাতা    ১৪          ৭        ৭      ১৪     -০.২১৪

হায়দরাবাদ ১৩          ৬       ৭      ১২      ০.৫৫৫

Source: https://www.banglatribune.com/sport/news/650640/%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%9D%E0%A7%9C-%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE