তুমিও হেঁটে দেখো অজানা কলকাতা… – এই সময়

কলকাতা নিউজ
পুরানো সেই দিনের কথা

জাহাজের মধ্যে তো দিনের পর দিন থেকে ব্যবসা চালানো যায় না। পাকাপাকি থাকার জায়গা দরকার। তাই সুন্দরবনের জঙ্গল কেটে গঙ্গার ধারে মোটামুটি একটা বন্দোবস্ত করে নিয়ে ছিলেন সাহেব। সঙ্গে তাঁর লোক লস্করেরাও অস্থায়ী আস্থানা তৈরি করেন। সালটা ছিল ১৬৯০। এরপর বয়ে গিয়েছে অনেক জল। কলকাতার গোড়াপত্তন কে করেছিলেন সেই নিয়ে অনেক দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবুও কলকাতা আছে কলকাতাতেই। আর তাই রইল কলকাতার বিশেষ কয়েকটি স্থান নিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য। হেঁটে ঘুরতে পারেন আপনিও।

কলকাতার অজানা অলিগলি



বাংলার রাজধানী তখন মুর্শিদাবাদ। নবাবরা সেখানেই থাকতেন। হুগলি নদীর ধারের জঙ্গল নিয়ে তাই কারও মাথাব্যথা ছিল না। সাহেব তাই বিনা বাধাতেই ছোটো একটা লোকবসতি গড়ে ফেলেছিলেন সেখানে। পরে সুতানুটিরবাবুদের থেকে কিছুটা জায়গা কিনে সেখানেই পত্তন হয়েছিল এক লোকালয়ের। সাহেবের নাম জব চার্ণক। অনেক ঐতিহাসিক না মানলেও বাংলা সাহিত্য এবং প্রাচীন কিছু দলিল দস্তাবেজ দাবি করে যে শহর কলকাতার পত্তন করেছিলেন তিনিই।

তুমিও ঘুরে দেখো কলকাতা



তারপর গঙ্গা থুড়ি হুগলি নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। সোঁদরবনের জঙ্গল আর এ শহরের টিকতে পারেনি। এটি এখন বিশ্বের অন্যতম আধুনিক মেগাসিটি। ব্রিটিশ আমলে নাকি কলকাতার বড়দিন ছিল বিশ্বের সেরা উত্সব. দেশের নানা জায়গা তো বটেই, এমনকি সুদূর ইংল্যান্ড থেকেও কলকাতার আত্মীয় বন্ধুদের বাড়িতে বড়দিন কাটাতে আসতেন অনেক ব্রিটিশরা । সময় বদলেছে। কিন্তু কলকাতার আভিজাত্য, সৌন্দর্য আর রহস্য একই রকম থেকে গেছে। তাই শহরভ্রমণের চাহিদাও এতটুকু কমেনি। ছবি সৌজন্য- TOI

কুমোরপাড়ার ঘোরাঘুরি



ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা, জাদুঘর রাইটার্স বিল্ডিং তো সবাই দেখেন। কিন্তু কলকাতার যে কিছু বিশেষ ঐতিহ্যবাহী ভ্রমণস্থল আছে তা জানেন কি? প্রথমেই কুমোরটুলির কথা ধরা যাক। গঙ্গামাটি দিয়ে ঠাকুরের মূর্তি গড়ার প্রাচীন ঐতিহ্য আজও অটুট আছে এখানে। বিশেষ করে দুর্গা এবং কালিপুজোর আগে কুমোরটুলি একবার ঘুরে না দেখলে ভ্রমণপ্রেমীদের বাকেট লিস্ট অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। মূর্তি বানাতে বানাতেই আপনার সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেবেন কুমোরপাড়ার কারিগড়রা। সে এক অনন্য অনুভূতি। ছবি সৌজন্য- TOI

চিনাম্যান চ্যাংচুং



ধোঁয়া ওঠা মোমো, পর্ক প্যাটিস, পর্ক কুকিজ দিয়ে ব্রেকফাস্ট সারতে চান? তাহলে ভোর থাকতেই সটান চলে যান টেরিটি বাজারে। এখানে গেলে মনে হবে চিনের কোনও প্রদেশে এসে পড়েছেন। অথচ চিনাম্যানরা সবাই বাংলাভাষী। ব্রেকফাস্টের পর এলাকাটি ঘুরে দেখুন। সেই ১৭৮০ সাল থেকে কলকাতার সঙ্গে চিনাদের যে সম্পর্ক তা বুঝতে পারবেন। এখানে বাংলা-চিনি ভাই ভাই। ছবি সৌজন্য- TOI

চল রাস্তায় সাজি ট্রাম লাইন



এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ট্রামলাইন রয়েছে কলকাতাতেই। একটা সময় এই ট্রামের রমরমা বাজার ছিল। গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে তাতে ঘাটতি পড়েছে। তবে সখ করে ট্রামে চড়ার লোকের সংখ্যাও মন্দ নয়। সামান্য ভাড়ায় কলকাতা ঘুরতে গেলে ট্রামের বিকল্প নেই। ট্রামের জানালা দিয়ে তিলোত্তমার রোজনামচা দেখাটাও একটা অ্যাডভেঞ্চার। ছবি সৌজন্য- TOI

চা-এর সঙ্গে টা



ঘুরতে ঘুরতে গলা শুকিয়ে গেলে তা ভেজানোর ব্যবস্থা রয়েছে। চা-খোর বাঙালির শহরে হাসপাতাল, স্কুলের চেয়েও চায়ের দোকান বেশি। তবে ভালো মশলাদার সুগন্ধি চা খেতে গেলে ঘুরে আসতে পারেন উত্তর থেকে। উত্তরবঙ্গ নয়, উত্তর কলকাতা। চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে পাবেন সেখানকার নামকরা তেলেভাজাও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে চা আর ভাজাভুজি চলতে থাকে। সঙ্গে আড্ডা ফ্রি। ছবি সৌজন্য- TOI

বইপাড়ায় বই পড়া



উত্তর কলকাতায় ঢুঁ যখন দেবেনই তখন শহরের বইপাড়াটা দেখতে ভুলবেন না যেন। বাসস্টপের নাম কলেজস্ট্রিট। আর সেখানে গেলে বিশ্বের যে কোনও প্রকাশনার বই পেয়ে যাবেন তুলনামূলক কমদামে। শুধু বই, লেখক আর প্রকাশনা সংস্থার নামটা বলে দিতে হবে। পুরনো নানা দুর্লভ বইয়ের সন্ধানও মিলবে এখানে। ছবি সৌজন্য- TOI

জয় গুরু অমিতাভ



কলকাতার অন্যতম উল্লেখযোগ্য জায়গার নাম শুনলে অবাক হতে পারেন। আর ভক্তদের মুখে ফুটতে পারে চওড়া হাসি। শহরের কুষ্টিয়া রোডে রয়েছে একটি মন্দির। মন্দিরের আরাধ্য দেবতা বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। নিত্যদিন তাঁর মূর্তি পুজো করেন ভক্তরা। গুরুপূর্ণিমার দিন সেখানে চলে মহা উৎসব। ছবি সৌজন্য- TOI

Source: https://eisamay.indiatimes.com/lifestyle/news-on-travel/flavours-of-kolkata8-offbeat-places-around-kolkata-for-the-true-explorer/articleshow/80385305.cms