ড্যান্সিং উইথ নেচার ছবির একটি দৃশ্য।
নির্মাতা মলয় দাশগুপ্ত নিজে এখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে গৃহবন্দি। কিন্তু ২৪ মিনিটের ছবির প্রতিটি পর্দায়, ফ্রেমে ধরা পড়ল তাঁর প্রবল উপস্থিতি।
#কলকাতা: লকডাউন, তাই কাজ নেই। গোটা ২০২০ সালটা এই শব্দবন্ধই ঘুরেছে মুখে মুখে। সংবাদপত্রে দেখা গিয়েছে শতশত নিরন্ন মানুষের ছবি। ওঁরা মূলত দেশ থেকে দেশান্তরে পাড়ি দেওয়া পরিযায়ী শ্রমিক। দেখা যায়নি লোকশিল্পীদের, খুব একটা জানা যায়নি সেই প্রান্তিক জীবনের টানাপোড়েন। আর এই অসুখী সময়ে সেই প্রান্তিক জীবনের এক খণ্ডকেই কিনো আই-এ দেখেছেন তথ্যচিত্র নির্মাতা মলয় দাশগুপ্ত, তথ্যচিত্রের নাম-ডান্সিং উইথ নেচার।
এবারের চলচ্চিত্র উৎসব স্বাভাবিক ভাবেই অন্য বারের তুলনায় ফাঁকা। কিন্তু সকাল ১১টা বাজতেই শিশির মঞ্চে তথ্যচিত্রে ভিড় জমালেন বেশ কিছু দর্শক। নির্মাতা মলয় দাশগুপ্ত নিজে এখন করোনায় গৃহবন্দি। কিন্তু ২৪ মিনিটের ছবির প্রতিটি পর্দায়, ফ্রেমে ধরা পড়ল তাঁর প্রবল উপস্থিতি।
মলয়াবাবু আমাদের একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন, আসলে একটি ৬৪ মিনিটের ছবি ‘হোয়্যার দ্যা মাস্ক স্পিকস দ্য মাইন্ড’-এর একটি খন্ডিতাংশ এই ছবিটি। সেরাইকেল্লা ছৌ-এর মুখোশশিল্পী কান্নাইলাল মহাপাত্রকে উৎসর্গস করা এই ছবিতে উঠে এসেছে এক হারিয়ে যেতে বসা শিল্পের (সেরাইকেল্লা ছৌ) ধারক গোষ্ঠীর বেঁচে থাকার নিয়ত অভিজ্ঞান। ধাপে ধাপে ধরা আছে কী ভাবে পরীখণ্ড নামক মার্শল আর্টটি ধাপে ধাপে নিজেদের বদলাতে বদলাতে একটি প্রায় ধ্রুপদী রূপ নিল। গল্পটি অবশ্য আবর্তিত হয়েছে তিন মুখোশ শিল্পীকে ঘিরে।
পুরুলিয়া ছৌ-এ যেমন মুখোশের ব্যবহার, সেরাইকেল্লা ছৌ-ও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু পার্থক্য আছে মুখোশের আদলে, চরিত্র নির্মাণে তাঁর ভঙ্গিতে। মলয়বাবু তনিষ্ঠ গবেষণায় ধরতে চেয়েছেন সেই বৈশিষ্ট্যটিকে যা সেরাইকেল্লা ছৌ-কে ছৌ-এর অন্যন্য ফর্মের থেকে আলাদা করেছে। অন্যন্য লোকায়ত নাচ বা সঙ্গীত যেমন উঠে আসে মাটি আকাশের দুরন্ত খেলায়, সেরাইকেল্লা তা নয়। এখানে এই শিল্পের গুণগ্রাহী ছিলেন স্বয়ং রাজপরিবার। সেরাইকেল্লার তদানীন্তন রাজা বিজয়প্রতাপ সিং দেও এই নৃত্যকলার পরমগুরু হিসেবে বিবেচিত হন। এই পরিবারেই বংশানুক্রমে এই নাচ তার অবয়ব পেয়েছে। এই চালচিত্রটিকে ধরেছেন মলয় দাশগুপ্ত।
দর্শকরা ছবির মৌতাতে খুশি, এশিয়াটিক সোস্যাইটির রিসার্চ ফেলো শান্তনু সাহার কথায়, সকাল থেকে শিশির মঞ্চে দুটি ছবি দেখলাম, দুটি কাজই বেশ ভালো। আরও একবার ছবিটি দেখতে পাওয়া যাবে ১৪ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায়, কলকাতা ইনফরমেশান সেন্টারে। যদিও মলয়বাবুর ছবির নিয়মিত দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান তাঁর পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবিটি দেখার জন্য।
পুরো খবর পড়ুন
Source: https://bengali.news18.com/news/entertainment/dancing-with-nature-a-documentary-made-by-malay-dasgupta-praised-in-kolkata-international-film-festival-2021-akd-547099.html