Jaipur Literature Festival | Sahitya Akademi award winner writer Alka Saraogi’s exclusive interview dgtl – Anandabazar Patrika

কলকাতা নিউজ

কলকাতা শুধু বাঙালিদের কি বলা যায়? মারওয়াড়িরাও তো আছেন। বাংলা সাহিত্য কি তাঁদের দেখতে পায়? প্রশ্ন তুললেন লেখিকা।

Advertisement

এ কলকাতার মধ্যে যে আরও বহু কলকাতা আছে, সে কথা বাঙালি কবি বলেছেন। সব ক’টি কলকাতা সকলের কাছের নয়। এমনকি, পরিচিতও নয়। আবার কোনও কোনও কলকাতা পরিচিত হলেও মহানগরীর আপন হয়ে ওঠেনি কখনও। তেমনই এক কলকাতার প্রসঙ্গ তুললেন শহরেরই এক লেখিকা। অলকা সারাওগি।

এ শহরে জন্ম। বড় হওয়া। স্কুল, কলেজ সব। এমনকি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ। তার পর লেখালেখি। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। সব কলকাতায় বসে। কিন্তু তাঁকে কত জন কলকাতাবাসী চেনেন? ‘‘এখনও আমাকে কলকাতার বাইরের লোকেই বেশি চেনেন,’’ উত্তর ৬২-র অলকার।

আরও পড়ুন:

‘মা বলেছিলেন কবিদের পাল্লায় না পড়তে’, জাভেদকে পাশে নিয়ে জয়পুরের মঞ্চে ঠাট্টায় মজলেন শাবানা

কলকাতা শহর নিয়ে অভিযোগ আছে কি তাঁর? তেমনটাও নয়। এতগুলি বছর তো এ শহরেই কেটেছে। ঘর নিয়ে অভিযোগ খুব থাকে বলে মনে করেন না তিনি। তবে অনুযোগ থাকে। তাঁরও তো ঘর এই শহরই। জয়পুরের বিমানবন্দরে কলকাতার সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপ হলে খুশি হন। গল্প করার ইচ্ছা হয়। আরও পাঁচ জন নগরবাসীর ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে বাঙালিকে দেখলে যেমনটা হয় আর কি!

Advertisement

তবু অলকার কলকাতা আলাদা। নিজেই বলেন লেখিকা। বলেন, ‘‘আমি অন্য একটা কলকাতা চিনি। মারওয়াড়িদের কলকাতা আর বাঙালিদের শহর অনেক দিক থেকে আলাদা। বহু দিন পর্যন্ত তো জানতামই না যে অন্য ধরনের লোকও থাকেন কলকাতা শহরে। এ শহরে বাংলা ভাষায় বেশি আদানপ্রদান হয়, সে কথাও বিশেষ জানা ছিল না।’’ বাঙালিরা এ কথা শুনলে যে অবাক হবেন, তা অলকাও জানেন। তবে তিনি গিয়েছেন হিন্দি মাধ্যম স্কুলে। সেখানে বন্ধুরা হিন্দিতে কথা বলতেন। বাড়িতেও তা-ই। আত্মীয়স্বজনও যথেষ্ট ছিলেন কলকাতাতেই। সে ভাবে বাংলা কথা শুনতে হয়নি ছোটবেলায়। ঘোর ভাঙে কলেজে গিয়ে। সেখানে নানা রকম ছাত্রছাত্রী। বেশির ভাগেই বাংলায় কথা বলেন। এবং জীবনযাত্রাও অন্য রকম।

আরও পড়ুন:

জয়পুরে ঝড় তুললেন কলকাতার ঊষা, সাহিত্য সভায় দর্শকের কোমর দুলল ‘ডার্লিং’-এর তালে

জয়পুরে ঝড় তুললেন কলকাতার ঊষা, সাহিত্য সভায় দর্শকের কোমর দুলল ‘ডার্লিং’-এর তালে

আনন্দবাজার অনলাইনের বাঙালি সাংবাদিকের সঙ্গে আড্ডায় বসে কলকাতা নিয়েই গল্প করলেন অলকা। ঠিক যেমন বার বার উঠে এসেছে তাঁর লেখা গল্প-উপন্যাসে, সে সব কথাই আবার হল। মনে করালেন, বাঙালি আর মারওয়াড়ি বছর বছর একসঙ্গে এক শহরে থাকলেও একে-অপরের কাছে আসার চেষ্টা করেনি বিশেষ। সেটাই সবচেয়ে বেশি অবাক করে অলকাকে। সেই বিস্ময় বার বার ফিরে আসে তাঁর ‘শেষ কাদম্বরী’, ‘জানকীদাস তেজপাল ম্যানশন’-এ। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত উপন্যাস ‘কলিকথা ভায়া বাইপাস’-এও আসে সে কথা।

বাঙালিদের কলকাতা তাঁকে এখনও আপন করেনি ঠিকই। তবে এ শহরের কাছে খানিকটা কৃতজ্ঞ অলকা। বলেন, ‘‘মারওয়ারিদের বাঙালিরা নিচু চোখে দেখে ঠিকই। দুই সম্প্রদায়ের বিশেষ মিলমিশও নেই। কিন্তু কলকাতায় এসে মারওয়াড়ি মহিলাদের তো লাভই হয়েছে।’’ বাঙালি মহিলারা যে ভাবে এগিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, তা দেখে মারওয়াড়িরা অনুপ্রাণিত হয়েছে বলে মনে করেন লেখিকা। ‘‘যদিও এখনও বাঙালিরা বিশ্বাস করেন না যে মারওয়াড়িরা লখাপড়া করে। আমার কথা বলায় তো এক বাঙালি আমার বন্ধুকে বলেছিলেন, ‘মারওয়াড়িরা আবার লেখে নাকি’! কিন্তু সে সব তো লেগেই থাকে। মারওয়াড়িরাও বাঙালিদের ‘কাঙালি’ বলে। বাঙালিরাও মারওয়াড়িদের ‘মেরো’ বলে। আবার সকলেই কলকাতার লোক,’’ মন্তব্য অলকার।

আরও পড়ুন:

‘প্রতিরোধের কোনও বিকল্প নেই’, জয়পুরের সাহিত্য উৎসবে বার্তা নোবেলজয়ী লেখকের

‘প্রতিরোধের কোনও বিকল্প নেই’, জয়পুরের সাহিত্য উৎসবে বার্তা নোবেলজয়ী লেখকের

তবে কলকাতার মারওয়াড়ি সম্প্রদায়কে বুঝতে গেলে কলকাতার মানুষ হতে হবে, মনে করেন লেখিকা। বিশ্বযুদ্ধের আমলে কলকাতার মারওয়াড়ি আর এখনকার মারওয়াড়ির মধ্যে অনেক ফারাক আছে। কলকাতা না চাইলেও তো সে সব এ শহরেরই ইতিহাসের অংশ। তাই তাচ্ছিল্যের তোয়াক্কা খুব একটা করেন না তিনি। নিজের মতো করে নিজের কলকাতার কথা বলে চলেন। তা-ও আবার হিন্দি ভাষায়। তাঁর চোখ দিয়ে হিন্দি সাহিত্যের পাঠকরা কলকাতা শহরকে চিনতেও শেখেন। জয়পুরের সাহিত্য উৎসবে এসেও নিজের শহরের কথাই তো বলেছেন ল্যান্সডাউন এলাকার বাসিন্দা অলকা। যেমন ভাবে হিন্দি সাহিত্য পাঠের দিকে জোর দিয়েছেন, তেমন ভাবেই কলকাতার কথাও বলেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডার মাঝে বলেন, ‘‘বাংলা সাহিত্য-সিনেমা মারওয়াড়িদের একই ভাবে দেখেছে। সে সত্যজিৎ রায়ের মতো বড় মাপেরই কেউ হোন না কেন। সকলের চোখেই মারওয়াড়িরা সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী। সকলেই খুব ধনী। বুদ্ধিজীবী বাঙালিদের থেকে অনেক দূরের। কিন্তু তা তো ঠিক নয়। নানা রকম মারওয়াড়ি আছেন। ঠিক যেমন বিভিন্ন মানসিকতার বাঙালিরা আছেন। কলকাতায় এত বছর পরও মারওয়াড়িরা যেন সেই ইহুদি হয়ে রয়ে গিয়েছেন। কলকাতা শহরের গল্প বলতে বলতে সেই ভুল ধারণা ভাঙার চেষ্টা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের
Google News,
Twitter এবং
Instagram পেজ)

Source: https://news.google.com/__i/rss/rd/articles/CBMifGh0dHBzOi8vd3d3LmFuYW5kYWJhemFyLmNvbS9saWZlc3R5bGUvc2FoaXR5YS1ha2FkZW1pLWF3YXJkLXdpbm5lci13cml0ZXItYWxrYS1zYXJhb2dpcy1leGNsdXNpdmUtaW50ZXJ2aWV3LWRndGwvY2lkLzE0MDEyMjLSAQA?oc=5