নারায়ণগঞ্জ, কলকাতা, ঢাকা হয়ে ‘খেলা’ এখন সংসদে – Bangla Tribune

কলকাতা নিউজ

মাঠ থেকে নারায়ণগঞ্জ, কলকাতা ও ঢাকা হয়ে ‘খেলা’ এখন সংসদে। বুধবার (২ নভেম্বর) অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘খেলা’ নিয়ে এলেন জাতীয় সংসদে। বিএনপির হারুন ‘খেলা’ বন্ধের দাবি তুললে ওবায়দুল কাদের ‘খেলা’ চালু রাখার কথা বলেন। বিএনপির শাসনামলে জিরো উন্নতি এবং তাদের অগ্নিসন্ত্রাস ও খুনের বিরুদ্ধে ‘খেলা’ হবে বলে উল্লেখ করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।

বুধবার সংসদে বৈঠকের শেষ পর্যায়ে হারুনুর রশীদকে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর দেন স্পিকার। এ সময় তিনি ‘জনঅসন্তোষ’ ও জনদুর্ভোগের কথা উল্লেখ করেন। সরকারের সমালোচনা করেন। সরকারের ‘খেলা’কে জনদুর্ভোগের সঙ্গে তুলনা করে তিনি ‘খেলা’ বন্ধের দাবি করেন। জবাবে কাদের ‘খেলা’ অব্যাহত থাকবে বলে কড়া জবাব দেন।

হারুন তার বক্তব্যে জনদুর্ভোগ থেকে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশ এখন জনদুর্ভোগের দেশে পরিণত হয়েছে। এই জনঅসন্তোষ লাঘব করতে সরকারের কোনও পদক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না।’

বিমানবন্দর সড়কে যানজটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যানজটের কারণে গত ২৬ অক্টোবর সকালে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে বিমানবন্দর পর্যন্ত হেঁটে যেতে হয়েছে। বিমানের নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা পর পৌঁছাই। পথে শত শত বিমানযাত্রী বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে হেঁটে গেছেন। আর সরকারকে গালিগালাজ করেছেন। এটা একদিনের সমস্যা নয়। ঢাকা-গাজীপুর সড়কে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ হচ্ছে।’ এ সমস্যা সমাধানে বিএনপির এমপি আন্তর্জাতিক বিমানযাত্রীদের জন্য যথাযথ ট্রাফিকিং ব্যবস্থাসহ আলাদা প্যাসেজ তৈরির দাবি করেন। হারুন বিমানবন্দরে তল্লাশির নামে যাত্রীদের হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ করেন।

সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘যোগাযোগমন্ত্রী প্রায়ই বলছেন খেলা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর খেলা হবে। আমরা এমন খেলা দেখতে চাচ্ছি না যে জনদুর্ভোগে মানুষ পড়েন। এ দেশে দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ—এগুলো নিয়ে কয়েক মাস যাবৎ মানুষ সভা সমাবেশ করছে। আপনি কেন পরিবহন বন্ধ করছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘কী কারণে পরিবহন বন্ধ হয়েছে বলতে পারবো না।’ দেশ চালাচ্ছেন কেন আপনারা? একটা নয়, দুটো নয়, একের পর এক। উপর্যুপরি আগামী ৫ তারিখে বরিশালে সমাবেশ হবে। লঞ্চ বন্ধ, বাস বন্ধ, থ্রি-হুইলার বন্ধ। ট্রেন বন্ধ। সবকিছু বন্ধ। এর ফলশ্রুতিতে যে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তা কল্পনা করা যায় না। যোগাযোগমন্ত্রী আছেন, দয়া করে দুর্ভোগ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। জনদুর্ভোগ আর বাড়িয়েন না। জনদুর্ভোগে যে জনঅন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তাতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে। মনে করি, এই বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে।’’

হারুন বলেন, ‘সরকারকে বলবো রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরে আসুন। দীর্ঘদিন বিরোধী দলকে যে সভা-সমাবেশ করতে দেননি, সেই জায়গায় একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। আমি মনে করি, খেলা বন্ধ করুন। খেলা বন্ধ করে সত্যিকার অর্থে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

পরে সংসদে ফ্লোর নিয়ে হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল হলেই বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করা কালচারে পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের যে প্রকল্প—পদ্মা সেতু হয়ে গেছে, মেট্রোরেল সামনে হচ্ছে। এলিভেটেড এগিয়ে গেছে। কর্ণফুলী টনেল রেডি। কী চান আর? একটা সরকার এতগুলো প্রজেক্ট—যেদিকে তাকান ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস ওভারপাস। আপনাদের সময় কী ছিল? জিরো। ওই জিরোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। ওই জিরো যে করছেন, ভোগান্তিতে রাখছেন—লাখো কোটি মানুষকে; সেটিই খেলা হবে।’

ঢাকা-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘‘গাজীপুরে পানির লাইন খুবই খারাপ। আমি নিজেও ভোগান্তিতে আছি। গলার ‘কাঁটা’ও বলেছি। স্বীকার করেছি। এসব স্বীকার করার কালচার আপনাদের মধ্যে নেই। প্রকাশ্যে বলেছি, প্রকল্পটার ডিজাইনে একটু ত্রুটি ছিল। সে কারণে প্রবলেম হয়েছে। কিন্তু আজকে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ওই রাস্তা এখন স্বাভাবিক। ৬ তারিখে ইনকামিংটা খুলে দেবো। না জেনে কথা বলবেন না। এত কাজ সরকার করছে, একটাতে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। আমরা তো স্বীকার করেছি। অস্বীকার করিনি।’’

বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে হারুনের অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বাস ধর্মঘট কেন হয়েছে, শিমুল বিশ্বাসকে (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) জিজ্ঞেস করুন। কেন মন্ত্রী বলবে? সে পরিবহনের নেতা। (সড়ক পরিবহন সমিতির) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি বাসদ, প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ (শাজাহান খান)। আর মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট রাঙ্গা, জাতীয় পার্টি। সেক্রেটারি আওয়ামী লীগ-এনায়েত। ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের শিমুল বিশ্বাস। সে কোন দলের? সে একটা স্টেটমেন্ট দেয় না কেন? সে কি বিএনপি? নাকি অন্য কোনও দল? আপনাদের দলের নেতা। তাকে জিজ্ঞেস করেন। হাসেন কেন? আগুনে বাস পুড়িয়েছে তো? আগুনে বাস পোড়ালে ভালো লাগে! বাসওয়ালারা এখন আর বিশ্বাস করে না। এরা বিএনপিকে দেখলেই মনে করে আগুন নিয়ে আসছে। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে পেট্রোলবোমা। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে ককটেল। এখন আবার পতাকা! লাঠিসোঁটার সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।’

খেলা অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে। এর বিরুদ্ধেই খেলা হবে। খেলা হবে। আমি বলছি, খেলা হবে খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খারাপ কি বলেছি?’

প্রসঙ্গত, বছর ছয়েক আগে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘খেলা হবে’। ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে শামীম ওসমান তিনবার বলেছেন ‘খেলা হবে’। ‘আমরা খেলবো’ এই শব্দবন্ধও এসেছে কয়েকবার। পরে আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমও ২০১৩ সালের নির্বাচনে খেলা হবে বলে একাধিকবার বক্তব্য দেন। বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক বক্তব্য ‘খেলা হবে’ পরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জনপ্রিয় রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত হয়। এখন আবার কলকাতা হয়ে স্লোগানটি ফিরে এসেছে ঢাকায়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কয়েক দিন ধরেই ‘খেলা হবে’ বলছিলেন। গত শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি বলেন ‘খেলা হবে’। এরপর তিনি কিছুক্ষণ থামেন। এ সময় সম্মেলনের মাঠ থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘খেলা হবে’, ‘খেলা হবে’।

Source: https://news.google.com/__i/rss/rd/articles/CBMijgNodHRwczovL3d3dy5iYW5nbGF0cmlidW5lLmNvbS9wb2xpdGljcy9hd2FtaS1sZWFndWUvNzcwODc1LyVFMCVBNiVBOCVFMCVBNiVCRSVFMCVBNiVCMCVFMCVBNiVCRSVFMCVBNyU5RiVFMCVBNiVBMyVFMCVBNiU5NyVFMCVBNiU5RSVFMCVBNyU4RCVFMCVBNiU5Qy0lRTAlQTYlOTUlRTAlQTYlQjIlRTAlQTYlOTUlRTAlQTYlQkUlRTAlQTYlQTQlRTAlQTYlQkUtJUUwJUE2JUEyJUUwJUE2JUJFJUUwJUE2JTk1JUUwJUE2JUJFLSVFMCVBNiVCOSVFMCVBNyU5RiVFMCVBNyU4Ny0lRTIlODAlOTglRTAlQTYlOTYlRTAlQTclODclRTAlQTYlQjIlRTAlQTYlQkUlRTIlODAlOTktJUUwJUE2JThGJUUwJUE2JTk2JUUwJUE2JUE4LSVFMCVBNiVCOCVFMCVBNiU4MiVFMCVBNiVCOCVFMCVBNiVBNiVFMCVBNyU4N9IBkgNodHRwczovL3d3dy5iYW5nbGF0cmlidW5lLmNvbS9hbXAvcG9saXRpY3MvYXdhbWktbGVhZ3VlLzc3MDg3NS8lRTAlQTYlQTglRTAlQTYlQkUlRTAlQTYlQjAlRTAlQTYlQkUlRTAlQTclOUYlRTAlQTYlQTMlRTAlQTYlOTclRTAlQTYlOUUlRTAlQTclOEQlRTAlQTYlOUMtJUUwJUE2JTk1JUUwJUE2JUIyJUUwJUE2JTk1JUUwJUE2JUJFJUUwJUE2JUE0JUUwJUE2JUJFLSVFMCVBNiVBMiVFMCVBNiVCRSVFMCVBNiU5NSVFMCVBNiVCRS0lRTAlQTYlQjklRTAlQTclOUYlRTAlQTclODctJUUyJTgwJTk4JUUwJUE2JTk2JUUwJUE3JTg3JUUwJUE2JUIyJUUwJUE2JUJFJUUyJTgwJTk5LSVFMCVBNiU4RiVFMCVBNiU5NiVFMCVBNiVBOC0lRTAlQTYlQjglRTAlQTYlODIlRTAlQTYlQjglRTAlQTYlQTYlRTAlQTclODc?oc=5