Kolkata Karcha: দাও ফিরে সে লাবণ্য – Anandabazar Patrika

কলকাতা নিউজ

ইতিহাস ছুঁয়ে

ব্রিটিশ ভারত, ১৯২২। দেশে টাকাপয়সা জোগান ও দেখাশোনার কাজ করত কারেন্সি অফিস। সে বছরই কলকাতার কারেন্সি অফিসের কর্মীরা প্রতিষ্ঠা করেন ‘কারেন্সি ইউনিয়ন’, পরে তা গড়ে ওঠে বম্বে, মাদ্রাজেও। সূচনাপর্বে সংগঠনের সভাপতি ছিলেন বিপিনচন্দ্র পাল। ১৯৩৫ সালে তৈরি হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, কারেন্সি ইউনিয়নও নাম পাল্টে হল ‘রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন’। স্বাধীনতার আগে ও পরে দেশের ইতিহাসের সাক্ষী এই সংগঠন এ বছর পালন করছে তাদের শতবর্ষ, ১৯২২-এর কারেন্সি ইউনিয়ন-এর শিকড় ছুঁয়ে। এআইটিইউসি এবং তৎকালীন ‘ইম্পিরিয়াল ব্যাঙ্ক’-এর ইউনিয়নের পরে তৃতীয় প্রাচীনতম এই সংগঠন প্রস্তুত হচ্ছে শতবর্ষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের জন্য, তারই অঙ্গ হিসেবে গত ৮ জুন সংবর্ধিত হলেন সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি ও সম্পাদকেরা।

আবিষ্কার

রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সহশিল্পী এক বিদেশিনি! এই শহরেরই ঘটনা, ১৯৮২ সালের। হেমন্তের গানের বিশেষ অনুরাগী ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী জ্যানেট ফে সিমান্স কলকাতায় এলে, রবীন্দ্র সদনের অনুষ্ঠানে কলকাতা শুনেছিল দ্বৈতকণ্ঠে ‘ওগো নদী আপন বেগে’, ‘পুরানো সেই দিনের কথা’, ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ’, ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’… জ্যানেট একা গেয়েছিলেন ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আরও কয়েকটি। অনুষ্ঠানটির লাইভ রেকর্ডিংটি ছিল ‘হেমন্ত মুখোপাধ্যায় স্মরণ কমিটি’র সভাপতি তুষার তালুকদারের ব্যক্তিগত সংগ্রহে, তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্মরণ কমিটির সম্পাদক সৌম্যেন অধিকারীর উদ্যোগে গত ১৬ জুন শিল্পীর জন্মদিনে তা-ই প্রকাশিত হল সে কি ভোলা যায় সিডি আকারে।

সঙ্গীত দিবসে

লোকসঙ্গীত শিল্পীদের সঙ্গে নিবিড় যোগ ‘বাংলানাটক ডট কম’ সংস্থার। গ্রামবাংলার শিল্পীদের দেশ-বিদেশের উৎসব ও শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছে তারা, ‘ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন’ এবং ‘ওমেক্স’-এর মাধ্যমে বাংলার লোকসঙ্গীতকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বের দরবারে। আগামী ২১ জুন বিশ্ব সঙ্গীত দিবস, লোকসঙ্গীতে কলকাতা মাতাবে তারা। জ্ঞান মঞ্চে অনুষ্ঠান বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা, থাকবেন বাংলার বাউল, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি ও ঝুমুর শিল্পীরা, সঙ্গী হবেন জয়সলমেরের মাঙ্গানিয়া সঙ্গীতের দল। বিশিষ্ট ‘এথনোমিউজ়িকোলজিস্ট’, রেডিয়ো ও রেকর্ড প্রযোজক দেবেন ভট্টাচার্যের জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হল গত বছর, তাঁর স্মরণে নিবেদিত হবে সঙ্গীত-শ্রদ্ধার্ঘ্য, থাকবেন মৌসুমী ভৌমিক।

সেতুবন্ধন

ভাষা আলাদা, সংস্কৃতিও, তবু তো সেতু বাঁধা যায়। চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে সেই চেষ্টাই করে সিনে-চর্চা গোষ্ঠী ‘সিনেমাথেক কলকাতা’। দিল্লির মেক্সিকো দূতাবাসের সহযোগিতায় এ বার তাদের আয়োজন দু’দিন ব্যাপী মেক্সিকান চলচ্চিত্র উৎসব, নন্দন-৩’এ, আগামী ২০-২১ জুন। েদখানো হবে তিনটি ছবি: লেয়োনা, প্যান-আমেরিকান মেশিনারি, অ্যাট ডন। রয়েছে মেক্সিকান চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনাও, থাকবেন গৌতম ঘোষ। অন্য দিকে, বইয়ের মধ্য দিয়ে সেতুবন্ধনের কাজ দৃঢ় হল আরও— কলকাতায় মেক্সিকোর কনসাল সুমিত মজুমদার সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ২১টি বই তুলে দিলেন ন্যাশনাল লাইব্রেরির মুখ্য গ্রন্থাগার ও তথ্য আধিকারিকের হাতে। অক্তাভিয়ো পাজ়, রোসারিয়ো কাস্তেলানোস, লুই ভিলোরো-সহ খ্যাত লেখকদের সাহিত্যসম্পদ।

মহোৎসবে

১৮৮৫-র গ্রীষ্মে গলায় একটা ব্যথা অনুভব করেন শ্রীরামকৃষ্ণ, কর্কটরোগের সে-ই সূত্রপাত। সে বছর পানিহাটিতে দণ্ডমহোৎসব তথা চিঁড়া উৎসবের দিন পড়েছিল ২৫ জুন, শ্রীরামকৃষ্ণ যাবেন উৎসবে, অসুস্থতা সত্ত্বেও, বলেছিলেন “একটু সামলে চললেই হবে।” কোথায় কী সামলানো, উৎসবময় পেনেটিতে মণি সেনের বৈঠকখানার পাশে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের প্রশস্ত উঠানে কীর্তনদলে মিশে ভাবাবেশে মহানৃত্য, তার বর্ণনা আছে স্বামী সারদানন্দের শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণলীলাপ্রসঙ্গ গ্রন্থের ‘পাণিহাটির মহোৎসব’ অংশে। শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে নতুন নয় এই মহোৎসব, প্রথম আসেন ১৮৫৮ সালে, ১৮৮৫ পর্যন্ত সাতাশ বছরে নিয়মিত যোগ দিয়েছেন শ্রীচৈতন্য-নিত্যানন্দের স্মৃতিধন্য এ উৎসবে। আনন্দ করেছেন, ভাববিহ্বল ও সমাধিমগ্ন হয়েছেন, দই-চিঁড়া-ফলের মালসা ভোগ (ছবিতে যেমন, এখনকার) দিয়েছেন, প্রসাদ পেয়েছেন। পাঁচশো বছর ছাড়ানো দণ্ডমহোৎসবের আবহে সেই বিবরণীই প্রকাশিত হল সদ্য, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পেনেটীর মহোৎসবে পুস্তিকায় (প্রকাশক: ডিআরএসটেক সুখচর), শেখর কুমার শেঠের সম্পাদনায়।

Source: https://www.anandabazar.com/west-bengal/kolkata/kolkata-karcha/cid/1351294