রোদ্দুর রায়কে নিয়ে বিপাকে কলকাতা পুলিশ! – Daily Inqilab

কলকাতা নিউজ

ওপার বাংলার জনপ্রিয় ব্লগার অনির্বাণ রায়। যিনি দুই বাংলাতেই পরিচিত রোদ্দুর রায় নামে। তিনি সামাজিক মাধ্যমে কটূক্তির মধ্য দিয়ে নিজের যুক্তি তুলে ধরেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়-কেউই বাদ যায় না তার কটূক্তি থেকে। সেই রোদ্দুর এখন কলকাতা পুলিশের হেফাজতে। যাকে আইনি ভাষায় বলা হয় পিসি বা পুলিশ কাস্টডি। কলকাতাবাসীর মধ্যে অনেকেই তাই মজার ছলে বলছেন- সব ঠিক ছিল, পিসিকে (মমতা) নিয়ে ভিডিও বানাতে গিয়েই রোদ্দুর এখন পিসিতে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, রোদ্দুরের বিরুদ্ধে মানহানি, অশালীন বাক্য এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ঘৃণা প্রদর্শনসহ একাধিক ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। আপাতত ১৪ জুন পর্যন্ত তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) ময়ূখ মুখোপাধ্যায়।

আরো জানা গেছে, অনস্ক্রিনের রোদ্দুর পুলিশি হেফাজতে একেবারে শীতল। লকআপে একেবারেই নিস্তেজ হয়ে গেছেন। এমনটাই দাবি করেছেন লালবাজারের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। লকআপে একেবারে নাকি লক্ষ্মী ছেলে তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই খাওয়া-দাওয়া, ঘুম সবই সারছেন। তবে মাঝে মধ্যে কি সব বিড়বিড় করে আওড়াচ্ছেন। আর তা ঠাহর করতে কালঘাম ছুটেছে পুলিশের।

এদিকে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রোদ্দুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তার ভিডিও তাকেই দেখানো হচ্ছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন এসব ভিডিও তিনি বানিয়েছেন, উত্তরে রোদ্দুর নাকি বারেবারে বলে উঠছেন ‘জয় মোক্সা জয়। ’ কী এই মোক্সা? তা কোনও ভাবেই বুঝতে পারছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। বাংলার পুলিশ এতদিন মার্কসবাদ শুনেছেন, মোক্সাবাদ এবারই প্রথম। তাই হয়ত বুঝে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে!

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতীয় গায়ক কেকের মৃত্যুর পর বানানো এক ভিডিওতে মুখ্যমন্ত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, কবীর সুমন, ব্রাত্য বোস, রূপঙ্কর বাগচী এমনকী প্রধানমন্ত্রী মোদী- সবারই সমালোচনা করেছিলেন অশ্রাব্য গালিগালাজ করে। ভিডিও পোস্ট হতেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই শাসক দলের এক নেতা থানায় রোদ্দুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি রোদ্দুরের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানান। এরপরই গত ৭ জুন গোয়া থেকে রোদ্দুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৯ জুন তাকে আদালতে তোলা হয়। সেদিন আদালতের বাইরে রোদ্দুরের সমর্থনে হাজির হয়েছিল বেশ কিছু সংগঠন ও তার অসংখ্য ভক্ত।

রোদ্দুর রায় একাধারে কবি, লেখক, গায়ক, গবেষক আবার সামাজিক মাধ্যমে তার ব্লগ যথেষ্ট জনপ্রিয়। মুখে তার অশ্রাব্য ভাষার ফোয়ারা ছোটে। কিন্তু তিনি মোটেও অশিক্ষিত নন। দিল্লির নয়ডাতে আইটি সেক্টরে বড় পদের চাকরি ছেড়ে আবার পড়াশোনায় ফিরে আসেন। শুরু করেন গবেষণা। গবেষণার বিষয়বস্তু চেতনা ও বিজ্ঞান। অবিরাম গান এবং কবিতার বিকৃতি ঘটানো নাকি তার গবেষণার একটা অংশ। তাই অনেকের কাছে তিনি ক্ষ্যাপা, আবার অনেকের কাছে প্রতিবাদী। কেউ তার ভক্ত, কেউ তার সমালোচক।

Source: https://www.dailyinqilab.com/article/493221/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B6