উত্তর প্রদেশের আলীগড়ে জন্ম রিঙ্কু সিংয়ের। বাঁহাতে ব্যাট করার পাশাপাশি অফ ব্রেক বোলিংয়েও পারদর্শী ২৪ বছর বয়সী এই তরুণ।
যে পরিবারে তার জন্ম সেখান থেকে ক্রিকেটার হয়ে ওঠা রিংকুর জন্য সোনার হরিণ। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে ঝাড়ুদার থেকে হয়েছেন তারকা ক্রিকেটার।
রিঙ্কুর বাবা খানচাঁদ সিং গ্যাসের সিলিন্ডার বিলি করতেন। লখনউয়ে দুটি ঘরে চার ভাই-বোন এবং মা-বাবাকে নিয়ে রিঙ্কুদের সংসার। দুই বেলা ঠিকমতো খাবার জুটত না। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখা রিঙ্কুকে তার ভাই এক জায়গায় ঝাড়ুদারের কাজে ঢুকিয়ে দেন।
ঝাড়ুদারের কাজের ফাঁকেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে রিঙ্কু খেলা চালিয়ে যান। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সুযোগ পেয়ে যান উত্তরপ্রদেশের রাজ্য দলে। রাজ্য দলের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আবির্ভাব ২০১৬ সালে।
রিংকুর জীবনের বাঁকবদলে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর)। বিশাল ঋণে ডুবে থাকা রিঙ্কুর পরিবারকে বাঁচিয়ে দিয়েছে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
গত চার বছরে কেকেআরের হয়ে একাধিক ম্যাচে ফিল্ডিং করেছেন রিঙ্কু। দুর্দান্ত সব ক্যাচ নিয়েছেন। নজর কেড়েছেন। প্রশংসিত হয়েছেন কিন্তু ম্যাচ প্রায় খেলেননি বললেই চলে। আসলে কোটিপতি লিগে তার সমসাময়িক ক্রিকেটাররা যখন অধিনায়ক হয়ে গিয়েছেন, রিঙ্কু তখন ১২টি ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ১৩৫ রান। বড় বড় নামের পাশে রিঙ্কুর সুযোগ পেতে হলে ব্যাটকে কথা বলাতে হতো। সেটা হয়নি, তাই সুযোগও পাননি। রিঙ্কুও জানেন সেটা।
২০১৮ সালের নিলামে ৮০ লাখ টাকা পাওয়ার পর রিঙ্কু বলেছিলেন, ভেবেছিলাম ২০ লাখ পাব; কিন্তু আমাকে ৮০ লাখ টাকা দিয়ে নেওয়া হয়! এতে আমার পরিবারের জন্য অনেক ভালো হয়েছে। ভাইয়ের বিয়েতে সাহায্য করতে পারব। বোনের বিয়ের জন্যও কিছু টাকা বাঁচিয়ে রাখা যাবে। আর পরিবার নিয়ে একটা ভালো বাড়িতে থাকার সুযোগ হলো।
দিল্লিতে একটি প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে উপহার হিসেবে পাওয়া বাইকটি বাড়ি ফিরে বাবাকে দিয়ে দেন। তার কারণ বাবার জন্য অনেক ভারি সিলিন্ডার বহন করা কষ্টকর।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৫টি সেঞ্চুরির সাহায্যে ৬৪.০৮ গড়ে ২ হাজার ৩০৭ রান করেছেন রিংকু। আর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪১ ম্যাচে অংশ নিয়ে একটি সেঞ্চুরির সাহায্যে ১ হাজার ৪১৪ রান সংগ্রহ করেন রিংকু। রঞ্জিতে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলার পেছনে অবদান রাখেন।
২০১৭ সালের আইপিএলে রিংকুকে ১০ লাখ টাকায় কিনে নেয় কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। সেবার কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ২০১৮ সালে কলকাতা তাকে কেনে ৮০ লাখ টাকায়। সে বছর চারটি ম্যাচ খেলেন রিঙ্কু। পরের বছর খেলেন পাঁচটি ম্যাচ। ২০২০ সালে কলকাতা তাকে একটি ম্যাচ খেলায়। ২০২১ সালের আইপিএলে রিঙ্কুকে কোনো ম্যাচ খেলানোই হয়নি। সেই রিঙ্কুকেই এবার ৫৫ লাখ টাকায় কিনে নেয় শাহরুখ খানের দলটি। এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত রিঙ্কু খেলেছেন দুটি ম্যাচ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিক।
Source: https://www.jugantor.com/sports/546582/%E0%A6%9D%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%8F%E0%A6%87-%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%95
