ঘরে বসে করোনায় পরীক্ষার ফলে নতুন সমস্যায় পুরসভা। ফাইল ছবি।
কলকাতা: করোনার সামান্য উপসর্গ থাকলে বাড়িতে বসে কিট দিয়ে পরীক্ষা করে নিচ্ছেন অনেকেই। এই প্রবণতা বেশি করে দেখা যাচ্ছে শহরের বহুতলগুলিতে। যার ফলে কার করোনা হয়েছে বা কী উপসর্গ রয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য কলকাতা পুরসভার কাছে আসছে না। এভাবে কিটের সাহায্যে নিজেদের মতো করে পরীক্ষা করার ফলেই কলকাতা পুরসভার অভ্যন্তরীণ নজরদারি বা ইন্টার্নাল সার্ভিলেন্সে অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে বলে জানালেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। এই সমস্যার কথা তুলে ধরে অতীন ঘোষ বলেন, কাউন্সিলররা আরও তৎপর হোন। সচেতনতা বাড়ুক পুরবাসীরও।
শুক্রবার সকাল থেকে ১০ নম্বর বরোর অন্যতম সংক্রমিত এলাকা ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে কাউন্সিলর মৌসুমী দাসকে। ডেপুটি মেয়রের বার্তাকে ফ্লেক্স আকারে লিখে মাইকিং করে প্রচার করেন তিনি। লেক গার্ডেন্স এলাকায় অটোতে ফ্লেক্স লাগিয়ে এবং এলাকায় হোডিং বোর্ড দিয়ে প্রাইভেট কিটের বদলে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে করোনা পরীক্ষা করার কথা জানান মৌসুমী দাস। গোটা ওয়ার্ড জুড়ে এমনই ফ্লেক্স লাগানো হবে বলে এলাকার জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন। এ ছাড়া এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাইকে প্রচার করা হবে প্রাইভেট কিটের বদলে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে যেন করোনা পরীক্ষা করানো হয়।
স্বাস্থ্যবিভাগের কর্তাদের কথায়, কিট দিয়ে পরীক্ষা নয়। বরং উপসর্গ দেখা দিলে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করান। না হলে কারও করোনা হয়ে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি হলে, সেই ব্যক্তি বা মহিলার সমস্যা গুরুতর হতে পারে। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের কর্তাদের কথায়, কঠোরভাবেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছেন তাঁরা। এমনকী পুরসভার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট বা হাসপাতালগুলির রিপোর্ট না থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না এমন বার্তাও দিচ্ছেন তাঁরা। এদিন প্রচারে ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি মানুষের কাছে সে কথা তুলেও ধরেন।
কলকাতা পুরসভায় গত কয়েকদিন ধরে যে ক’টি কনটেনমেন্ট এলাকার তালিকা তৈরি করেছে, তার মধ্যে এই ওয়ার্ডটি সবথেকে বেশি সংক্রমিত এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। বর্তমানে এই ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা রীতিমতো আকাশছোঁয়া। কলকাতা পুরসভার হিসাব বলছে এই ওয়ার্ডে উচ্চ বহুতলের সংখ্যা সবথেকে বেশি। আর এই উচ্চ বহুতলগুলিতেই প্রাইভেট কিট দিয়ে পরীক্ষা করার সংখ্যা সবথেকে বেশি। যে কারণে আক্রান্তের সংখ্যা সম্পর্কে পুরসভার কাছে তেমন তথ্য আসছে না। সমস্যায় পড়েছে কলকাতা পুরপ্রশাসনও।
বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোতে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। সেখানেই এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর হিসাবে উঠে আসে। তারপরই শুক্রবার লেক গার্ডেন্স, যোধপুর পার্ক এলাকার কাউন্সিলর রাস্তায় নেমে পড়েন। বহুতলের সোসাইটিগুলির যাঁরা কর্তা, তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বরোর চেয়ারম্যান। কনটেনমেন্ট জ়োন করার পর যাতে ব্যারিকেড না সরিয়ে দেওয়া হয় বা কলকাতা পুলিশের লাগানো কনটেনমেন্ট জ়োন ব্যানার খুলে না ফেলা হয় তার জন্য সোসাইটির কর্তাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। পুলিশকেও এলাকায় নজরদারি রাখতে হবে বলে জানান অতীন ঘোষ।
একইসঙ্গে মুম্বইয়ে যেমন করোনার নমুনা পরীক্ষার কিট বিক্রেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা কিট কিনছেন তাঁদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর রাখতে হবে। কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বৃহস্পতিবারই কাউন্সিলরদের বলেছেন, দোকানে দোকানে এই বিষয়টি জানাতে হবে। যাঁরা কিট কিনবেন তাঁদের নাম, ঠিকানা বা কোনও পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি রাখার জন্য বলা হবে।
আরও পড়ুন: TET: টেট নিয়ে আরও কড়া হাইকোর্ট! এবার উত্তরপত্র দেখাতে হবে পর্ষদকে
Source: https://tv9bangla.com/kolkata/kmc-urged-kolkatans-who-want-to-get-tested-for-covid-to-undergo-an-rt-pcr-test-so-that-the-result-is-noted-in-government-records-498485.html