পয়সা খরচ করলে কলকাতা স্টেশনেই মিলবে বিমানবন্দরের স্বাচ্ছন্দ্য – Aajkaal

কলকাতা নিউজ

আজকালের প্রতিবেদন
রাত–‌বিরেতে চিৎপুরের কলকাতা স্টেশনে পৌঁছলে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা নেই কলকাতা থেকে গভীর রাতে ট্রেন ধরারও। লকডাউনের মধ্যেই গড়ে উঠেছে পিপিপি মডেলে বিলাসবহুল ওয়েটিং রুম। সেখানে মিলছে ফিশ স্পা থেকে শুরু করে হরেক সুবিধা। সময় কাটানোর জন্য রয়েছে গেম জোন বা রিডিং জোনও। বিলাসবহুল হোটেলের মতো এখানেও রয়েছে স্নানের বন্দোবস্তও। স্নান করার আগে কলকাতা স্টেশনের প্রিমিয়াম ওয়েটিং রুমে চুল–‌দাড়ি কাটারও বন্দোবস্ত। থাকছে স্টেশনেই ভোজন ও নিদ্রার সুবন্দোবস্ত।
হাওড়া ও শিয়ালদার পাশাপাশি ধীরে ধীরে ব্যস্ত হয়ে উঠছে চিৎপুরের কলকাতা স্টেশনও। লোকাল ও দূরপাল্লার পাশাপাশি দুটি আন্তর্জাতিক ট্রেন ছাড়ে কলকাতা স্টেশন থেকেই। অবশ্য এখন বন্ধ ‘‌মৈত্রী’‌ ও ‘‌বন্ধন’‌। তবে রেলকর্তাদের আশা, কিছুদিনের মধ্যেই ফের চালু হবে ঢাকার জন্য মৈত্রী এবং খুলনার বন্ধন এক্সপ্রেস। চলবে দূরপাল্লার আরও ট্রেন। বেসরকারি ট্রেনও চলতে পারে কলকাতার ৫টি প্ল্যাটফর্ম থেকে।
সেই আশায় ভর করেই কলকাতা স্টেশনে যাত্রীদের বিমানবন্দরের মতো সুবিধা দিতে চাইছে ভারতীয় রেল। যাত্রীদের জন্য লিফট ও চলমান সিঁড়ি আগেই ছিল। তবে এখন লকডাউনে বন্ধ।  গড়ে উঠছে স্টেশন চত্বরেই শপিং মল।  মৈত্রী ও বন্ধন বাদে কলকাতা থেকে ছাড়ে ৩৯টি দূরপাল্লার ট্রেন। শহরতলির যাত্রীদের জন্য প্রতিদিন লোকাল ট্রেন চলে ৩০ জোড়া।  রাত–‌বিরেতে যাত্রীদের চিৎপুর স্টেশন থেকে নিজেদের গন্তব্যে যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়।  এমনকী, মফস্‌সলের যাত্রীরা ভোরের ট্রেন ধরতে এসেও বিড়ম্বনায় পড়েন। তাই গড়ে তোলা হয়েছে আকর্ষণীয় ওয়েটিং রুম। ওয়েটিং রুমের পোশাকি নাম ‘‌সফর’‌। প্রাইভেট সংস্থার হাত ধরে স্টেশনের মধ্যেই ঘণ্টা পিছু ৭৫ টাকা দিয়ে বাতানুকূল বিছানায় বিলাসবহুল ঘুমানোর বন্দোবস্ত গড়ে উঠেছে। রয়েছে পয়সা খরচ করে আরামদায়ক চেয়ারে বসারও বন্দোবস্ত। ২ হাজার স্কোয়্যার ফিটের এই ওয়েটিং রুমে রয়েছে ঝাঁ চকচকে সেলুন। ৫০ টাকা দিয়ে করা যায় স্নান। টয়লেট কিটস ফ্রি। রয়েছে ক্লোক রুমও। ওয়েটিং রুমেই আছে বই পড়ে বা খেলাধুলা করে সময় কাটানোর বন্দোবস্ত। আছে আলাদা বেবি ফিডিং রুম।  যাত্রীরা ইচ্ছা করলে ফিশ স্পাও নিতে পারেন এখানে। রয়েছে মাসাজ চেয়ার। সঙ্গে রয়েছে খাওয়া–‌দাওয়ার সুবন্দোবস্ত। প্যাকেটজাত খাবার ও পানীয় জল বাইরের দোকানের মতোই এমআরপি অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে। পাশেই রয়েছে একই সংস্থার ‘‌ফুড প্লাজা’‌। সফর–‌এর ইন–‌চার্জ নীতীশ গুপ্তা জানান, নিরামিষ থালির দাম তাঁরা ঠিক করেছেন প্রতি প্লেট ১৫০ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন দামে আমিষ খাবারও পাওয়া যাবে। সবকিছুরই দাম হবে যাত্রীদের নাগালের মধ্যেই, দাবি নীতীশের। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (সিপিআরও) কমল দেউ দাস জানিয়েছেন, বেসরকারি উদ্যোগে এই বিলাসবহুল বিশ্রামাগার ছাড়াও বিনামূল্যে রেল যাত্রীদের জন্য অন্যান্য পরিকাঠামোও থাকছে। যাত্রীরা যাতে বিনামূল্যের বা নামমাত্র খরচে ভাল পরিষেবা পান সে বিষয়টিও নিশ্চিত করছেন রেলকর্তারা। কোভিড পরিস্থিতিতে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে পরিচ্ছন্নতা। বন্ধন ও মৈত্রী–‌র যাত্রীদের জন্য স্টেশন এলাকাতেই গড়ে উঠছে বিএসএফের বিশাল ছাউনি। এছাড়াও কলকাতা স্টেশন থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার বাস ছাড়াও রয়েছে দিনরাত সাধারণ ও অ্যাপ ট্যাক্সির বন্দোবস্ত। তবে যাত্রীরা কবে থেকে ফের আগের মতো যাতায়াত করতে পারবেন সেবিষয়ে এখনও কোনও খবর নেই।

Source: https://aajkaal.in/news/kolkata/state-story-jafi