হাওয়া-বদল, দূষণে দিল্লিকে ছাড়িয়ে ‘বিপজ্জনক’ কলকাতা – এই সময়

কলকাতা নিউজ

এই সময়: কালীপুজো-দেওয়ালিতে নজিরবিহীন ভাবে ‘নির্মল’ রাত দেখেছে কলকাতা। রাজধানী দিল্লি তখন হাঁসফাঁস করছিল দূষণ-জালে। কিন্তু ছটের আগে হঠাৎই বাতাসের দূষণে দিল্লিকে টপকে গেল কলকাতা!

বুধবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মনিটরিং স্টেশনগুলির তথ্য বলছে, কলকাতার প্রায় সব জায়গাতেই দূষণ-সূচক খারাপ বা খুব খারাপের তালিকায় রয়েছে। অথচ, এখন অনেকটা উল্টো ছবি দিল্লিতে। সেখানে কালীপুজোর আগে থেকেই দূষণ-সূচক ঘোরাফেরা করছিল ৪০০-এর উপরে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেখান থেকে দূষণ-সূচক কিছুটা নেমে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে এ দিন ছিল খারাপ অথবা মাঝারি গুণমানের তালিকায়। এই উলটপুরাণের পিছনে অবশ্য হাওয়া বদলকেই দায়ী করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রেকর্ড বলছে, এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ রবীন্দ্রভারতী মনিটরিং স্টেশনে দূষণ সূচক ছিল ৩৫০-এর কাছাকাছি। গত ২৪ ঘণ্টায় তা সর্বোচ্চ ৩৯২-য়ে পৌঁছেছিল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, যাদবপুর, বিধাননগর, বালিগঞ্জ এলাকায় তা ছিল আড়াইশোর বেশি বা কাছাকাছি। রবীন্দ্র সরোবরে ছিল ২০০-এর বেশি। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত এইসব জায়গাতেও অনেক ক্ষেত্রে দূষণ-সূচক ছিল ৩০০-এর বেশি। অথচ কালীপুজোর রাতে যতটুকু বাজি পুড়েছে, তাতেও দূষণ-সূচক এতটা চড়েনি। দিল্লির আনন্দ বিহার, অশোক বিহার, লোদী রোড, দ্বারকার মতো জায়গায় অবশ্য দূষণ পরিস্থিতির আগের থেকে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লিতে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে এক-দু’দিন বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তাতে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা কিছুটা ধুয়ে গিয়েছে। ঠিক উল্টোটা হয়েছে বাংলায়।

বঙ্গোপসাগরে একটি উচ্চচাপ বলয়ের প্রভাবেব কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জলীয় বাষ্প ঢুকছে। তবে তা বৃষ্টি নামানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। উল্টে তাতে পশ্চিমি বাতাসের গতি মন্থর হয়ে গিয়েছে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা সরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘শীত পড়ার সময় এটা মাঝেমধ্যে হয়। বাতাসের গতি প্রতি সেকেন্ডে দু’মিটার বা তার কম হয়ে গেলে ধূলিকণাগুলি সরতে পারে না। বাতাসের গতি সেকেন্ডে ১০ মিটারের বেশি হলে তবে ধূলিকণাগুলি সরতে পারে।’ তবে এর পিছনে ধাপায় বর্জ্য পোড়ানো এবং কলকাতার আশপাশের জেলাগুলিতে ফসলের নাড়া পোড়ানোও সম্ভাব্য কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।

বুধবারের ‘এই সময়’-এ বর্ধমানে বিক্ষিপ্ত ভাবে নাড়া পোড়ানোর ছবিও তুলে ধরা হয়েছে। যেটুকু ধোঁয়া সেখান থেকে হচ্ছে, সেটাও মেঘলা আবহাওয়ার জন্য সরতে পারছে না। ফসলের গোড়া বা নাড়া পোড়ানোর উপর নজর রাখতে ইতিমধ্যেই পর্ষদ দিল্লি আইআইটির বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় একটি ল্যাবরেটরি চালু করেছে। উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে নাড়া পোড়ানোয় নজরদারি চলছে সেখান থেকে। যদিও এ বছর এখনও পর্যন্ত সে ভাবে নাড়া পোড়ানোর চিত্র ধরা পড়েনি।

কলকাতা

রবীন্দ্রভারতী–৩৪৬
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল–২৫৪
রবীন্দ্র সরোবর–২১৭
ফোর্ট উইলিয়ম–২৭২
যাদবপুর–২৬০
বিধাননগর–২৭৩
বালিগঞ্জ–২৪৮ B

দিল্লি

আনন্দ বিহার–২৩০
অশোক বিহার–২৩৭
চাঁদনিচক–২২৬
দ্বারকা–২৫০
জেএল নেহরু স্টেডিয়াম–১৯৪
লোধী রোড–১২৫
নজফগড়–২২০

(দিল্লি ও কলকাতার কয়েকটি জায়গার বুধবার বিকেল ৩টেয় দূষণ-সূচক, তথ্যসূত্র: কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ)

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন-

Source: https://eisamay.indiatimes.com/west-bengal-news/kolkata-news/kolkata-is-more-dangerous-than-delhi-in-air-pollution/articleshow/79297157.cms