ঝড়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত কলকাতা – DW (বাংলা)

কলকাতা নিউজ

আমফানের প্রভাবে কলকাতায় এখন ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। এই ঝড়েই কলকাতা বিপর্যস্ত। যত সময় যাচ্ছে ,ততই ঝড়ের গতি বাড়ছে। ঝড়ের কেন্দ্র বা চোখ এখনও কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে। তাতেই এই অবস্থা। ঝড়ের তাণ্ডবে নিউ মার্কেটে দোকানের চালা উড়ে গিয়েছে। সারা কলকাতা জুড়ে উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। সেই গাছ কোথাও বাড়িতে, কোথাও গাড়ির ওপর, কোথাও রাস্তা জুড়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে পড়েছে। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ। ইন্টারনেটের অবস্থা খুবই খারাপ। সব ফ্লাইওভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি বাড়ির বারান্দা ভেঙে পড়েছে।

তার সঙ্গে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা ঘণ্টায় ১০ মিমি বৃষ্টির জল বের করে দিতে পারে। যা অবস্থা তাতে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। গঙ্গায় জোয়ার এসে গেলে সেই জলও আর বের হবে না। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস হলো, সারা রাত ধরে ঝড়-বৃষ্টি চলতে পারে। এখনই রাস্তায় জল জমতে শুরু করেছে। যত সময় যাবে, রাস্তায় রাস্তায় জলের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। 

তবে এই মুহূর্তে কলকাতার সব চেয়ে বড় সমস্যা ভেঙে পড়া গাছ। প্রায় প্রতিটি এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই গাছ কোথাও বিদ্যুতের তার, কোথাও রাস্তার ট্রাফিক সিগন্যাল, কোথাও ল্যাম্প পোস্ট নিয়ে পড়েছে। ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে।  

কলকাতায় আমফান আসতে এখনও প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা দেরি আছে। আমফান যখন কলকাতার একেবারে কাছে আসবে বা পাশ দিয়ে যাবে, তখন তার গতি হতে পারে  ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। বা তারও বেশি। 

গঙ্গাও রীতিমতো উত্তাল হয়ে উঠেছে। ঢেউ বাড়ছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

কলকাতায় যে সব বাড়ি দুর্বল, সেখান থেকে লোকেদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেলেঘাটায় বেশ কিছু লোককে বিপজ্জনক বাড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম পুঁটিয়ারিতে একটি পুরনো বাড়ির বারান্দা ভেঙে পড়েছে। উত্তর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতায় পুলিশ লোকেদের বলছে, সকলে যেন বেশি করে জল ট্যাঙ্কে তুলে রাখেন। কারণ, ঘূর্ণিঝড় এলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হতে পারে। সেটা সারাতে সময় লাগবে। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবাও বিঘ্নিত হতে শুরু করেছে। 

কলকাতার রাস্তাঘাটে এখন লোক নেই। কেউ রাস্তায় নামলেই পুলিশ তাঁদের ঘরের ভিতর পাঠিয়ে দিচ্ছে। রাস্তায় কেবল পুলিশ, অ্য়ম্বুলেন্স এবং পুরসভার লোক। 

কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ”আমরা খবর পাচ্ছি, পূর্ব কলকাতা দিয়ে ঝড় যাবে। আমরা সতর্ক। আমি দুপুর থেকে কন্ট্রোল রুমে থাকব। গাছ পড়লে বা অন্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলে, এক দু’দিনের মধ্যে ঠিক করে নেওয়া যাবে। কিন্তু আমরা চাইছি, কারও যেন প্রাণহানি না হয়।” ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ফ্লাইওভারগুলির ওঠার মুখে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। কাউকে সেখানে চড়তে দেওয়া হচ্ছে না।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সারা রাত নবান্নে থাকবেন। তিনি লোকেদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তদারক করছেন। প্রশাসন কী কী ব্যবস্থা নেবে তা ঠিক করে দিয়েছেন। সেই সব ব্যবস্থা কতদূর এগোলো তা তিনি নিজে দেখছেন।

জিএইচ/এসজি(এএনআই, আবাপ)

Source: https://www.dw.com/bn/%E0%A6%9D%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE/a-53505516