অফিস ভাড়া দিয়ে আয় বৃদ্ধির পথে বিএসএনএল কলকাতা – এই সময়

কলকাতা নিউজ
বিএসএনএল
কৌশিক প্রধান


আয় বাড়াতে বিএসএনএল কলকাতা তাদের ২১টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ও অফিসের একটা বড় অংশ চলতি বছরের মধ্যেই ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিএসএনএল কলকাতার সদর দপ্তর টেলিফোন ভবনের দুটি তলা। পাশাপাশি, মানিকতলা ও মধ্যমগ্রামে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটির মালিকানাধীন দুটি জমিও চলতি অর্থ বছরের মধ্যে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই দু’টি জমি বিক্রি করে সংস্থাটি আরও অন্তত ১,০০০ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারবে।

স্বেচ্ছাবসরের মাধ্যমে মোট কর্মী সংখ্যা এক ধাক্কায় অর্ধেক হয়ে যাওয়ার পরেও বিএসএনএলের নগদ সঙ্কট কাটেনি। এই অবস্থায় জমি, অফিস বিক্রি করে, ভাড়া দিয়ে যে অর্থ আসবে তাতে নগদ সঙ্কট কিছুটা কাটাবে বলেই মনে করছেন বিএসএনএলের কর্তাব্যক্তিরা। অন্য দিকে, লকডাউনের মধ্যে কলকাতায় তাদের পরিষেবা অব্যাহত রাখতে ১০টি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খোলা রেখেছে সংস্থাটি।

বিএসএনএল কলকাতার চিফ জেনারেল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘টেলিফোন ভবনের একতলা ও দোতলা মিলিয়ে মোট ৫০,০০০ বর্গফুট জায়গা ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের হিসাবে, প্রতি বর্গফুট ৩০০ টাকা দরে ভাড়া হতে পারে। অ্যানেক্সি ভবনটির তিনটি তলাও ভাড়া দেওয়া হবে। তা ছাড়া ২১টি এক্সচেঞ্জ ও অফিসের প্রায় ৪০ শতাংশ জায়গাও ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বিএসএনএল কলকাতার মালিকানাধীন আরও দু’টি জমি রয়েছে মধ্যমগ্রাম ও মানিকতলায় যেগুলির মূল্য যথাক্রমে ১৫০ কোটি ও ৯০ কোটি টাকা। বিশ্বজিৎ জানান, কেন্দ্রের ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (ডিআইপিএএম) এই জমি দু’টি চলতি অর্থ বছরের মধ্যে নিলামে বিক্রি করবে। সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়া-র কলকাতা ব্রাঞ্চ হেড স্বপন দত্তর কথায়, ‘বিএসএনএলের এই দুটি জমিতে কোনও রকম আইনি সমস্যা বা জটিলতা নেই। ওই দুটি জমি নিলাম করে সংস্থাটি স্বচ্ছন্দে অন্তত ১,০০০ কোটি টাকা পেতে পারে। ডেভেলপাররা এরকম জমি কিনতে মুখিয়ে রয়েছে। মধ্যমগ্রামে ভাল আবাসন প্রকল্পে দাম বর্গফুট পিছু ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে।’

বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমাদের সমস্ত দপ্তর মিলিয়ে ভাড়া দেওয়ার মতো মোট ২ লক্ষ ২৩ হাজার বর্গফুটের মতো জায়গা রয়েছে এবং ওই ভাড়া বাবদ মাসে ২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা সংস্থার আয় হতে পারে।’

তবে টেলিফোন ভবনের এক-একটি তলার যা উচ্চতা, তাতে অনায়াসে একটি তলাকে দু’টি তলা বানিয়ে নেওয়া সম্ভব। সেই হিসাবে টেলিফোন ভবনের দু’টি তলা মিলিয়ে এক লক্ষ বর্গফুট জায়গার ভাড়া পেতে পারে বিএসএনএল। সেই হিসাবে শুধু টেলিফোন ভবনের একটা অংশ ভাড়া দিয়েই মাসে তিন কোটি টাকা বাড়তি আয় করতে পারে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি। টেলিফোন ভবন ভাড়া নিতে ইতিমধ্যেই আগ্রহ দেখিয়েছে ইপিএফও এবং জিএসটি কর্তৃপক্ষ। তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনা করবে বিএসএনএল।

পরিষেবার মান বাড়িয়ে আরও বেশি গ্রাহক নিজেদের নেটওয়ার্কে নিয়ে আসতে ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্থাটি শহরে ফোর-জি পরিষেবা শুরু করতে চলেছে। এ জন্য ২,০০০ টাওয়ারকে ফোর-জি-তে উন্নীত করার পাশাপাশি ৮০০ নতুন টাওয়ার বসানো হবে।

Source: https://eisamay.indiatimes.com/business/business-news/bsnl-kolkata-is-thinking-of-renting-out-properties-to-increase-income/articleshow/75419366.cms